আসালামু আলাইকুম, রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে পড়তে অনেকেই আগ্রহী। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে এবং বাংলায় কিভাবে আপনারা পড়বেন সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করব। পবিত্র মাহে রমজানের সময় রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে এবং বাংলায় যেকোনো ভাবেই হোক পাঠ করার মাধ্যমে আমাদের রোজা রাখতে হবে।
প্রতিটি মুসলমান ভাই ও বোনেদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা মাহে রমজানের রোজা কে ফরজ করেছেন। পবিত্র এই মাসটি খুব দ্রুতই আমাদের মাঝে উপস্থিত হতে চলেছে। তাই অবশ্যই রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে কিংবা বাংলায় কিভাবে আপনারা পাঠ করবেন সেই সম্পর্কে জানাটা অত্যন্ত জরুরী।
পবিত্র এ মাস হচ্ছে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার অন্যতম একটি বিশেষ মাস। রোজার নিয়ত কিভাবে পড়বেন সেই সম্পর্কে এই পোষ্টের মাধ্যমে তা সঠিকভাবে জানাব।
রোজা রাখার নিয়ত আরবি
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র মাস হিসেবে মাহে রমজান মাসটি আমাদের দান করেছেন।
এই মাসে আপনারা মহান আল্লাহর ইবাদতের পাশাপাশি রোজা রাখলে আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকল গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিবে ইনশাল্লাহ।
মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে অবশ্যই আমাদের তার ইবাদত বন্দেগি করতে হবে।
রমজান মাস হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআলার ইবাদত এবং বন্দেগী করার উত্তম একটি মাস।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে বেশি বেশি মহান আল্লাহর ইবাদত করতেন।
এছাড়াও রমজান আসার পূর্বে তিনি মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।
রমজান মাসের রোজাগুলো সঠিক নিয়মে রাখার জন্য সর্বপ্রথম যা করতে হবে সেটি হচ্ছে রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে এবং বাংলায় সঠিক নিয়মে জানতে হবে।
এছাড়াও রোজা রাখার নিয়ত আরবি এবং বাংলার পাশাপাশি আপনাদের ইফতারের দোয়া আরবিতে এবং বাংলাতে সঠিক নিয়মে জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
পবিত্র এই মাসকে ঘিরে আপনাদের আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা অত্যন্ত জরুরী।
পড়ুনঃ
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম আরবি রজব এবং শাবান মাস থেকেই মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মাহে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।
যেহেতু রমজান মাস আসতে আর বেশি দেরি নেই সে ক্ষেত্রে রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে এবং বাংলাতে জেনে নেয়া খুবই জরুরী।
মূলত সেহরি খাওয়ার পর আমাদের রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে কিংবা বাংলায় পাঠ করতে হবে।
এই প্রশ্নের মাধ্যমে আমরা রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে এবং বাংলায় আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। চলুন রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে এবং বাংলায় জেনে নেয়া যাক।
রোজা রাখার নিয়ত বাংলায় এবং আরবিতে
আপনারা মূলত রোজা রাখার নিয়ত দুই ভাবে পাঠ করতে পারবেন।
রোজা পালনের ক্ষেত্রে সেহরি এবং ইফতারের যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমনি রোজার নিয়ত এবং ইফতারের দোয়ার গুরুত্ব রয়েছে অপরিসীম।
আমাদের সকলের ক্ষেত্রেই রোজা রাখার জন্য রোজা রাখার নিয়ত আরবি অথবা বাংলায় পাঠ করা অত্যন্ত জরুরী।
সেহেরির পর পর আমাদের রোজা রাখার নিয়ত আরবি অথবা বাংলায় সহজভাবে পাঠ করলেই হবে।
রোজার নিয়ত আরবিতেঃ নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আজকের পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
পড়ুনঃ
এছাড়াও আপনারা আরও একটি নিয়ম অনুসরণের মাধ্যমে রোজা রাখার নিয়ত আরবি এবং বাংলায় জানতে পারেন।
আপনারা সেহরির পর রোজা রাখার নিয়ত আরবি অথবা বাংলায় এভাবেও করতে পারেন।
রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে উচ্চারণঃ বিসাওমি গাদিন নাওয়াইতু মিন শাহরি রামাদান।
অর্থ : আমি রমজান মাসের আগামীকালের রোজা রাখার নিয়ত করছি।
আপনার রোজা সহিহ হওয়ার জন্য নিয়ত করার কিছু শর্ত রয়েছে। নিয়ত হচ্ছে, অন্তর থেকে কোন কাজের জন্য সংকল্প কিংবা প্রতিজ্ঞা করা।
রোজাদারদের জন্য সেহেরী খাওয়া এবং ইফতার করে রোজা শেষ করা সুন্নত।
বিশেষ কিছু যদি ইফতারে না থাকে তাহলে সামান্য খাদ্য কিংবা শুধুমাত্র পানি পান করে রোজা শেষ করা যায়।
ঠিক একই নিয়মে সেহেরীর সময় আপনারা সামান্য পানি পান কিংবা সামান্য খাদ্য খেলে সেহরির সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
খাবার শেষ হওয়ার পর আজানের সময় কিংবা আযানের পূর্বে আপনারা রোজা রাখার নিয়ত আরবি কিংবা বাংলায় করে নিবেন।
রোজার ইফতারের দোয়া
ইতিমধ্যেই রোজা রাখার নিয়ত আরবি এবং বাংলায় কিভাবে পাঠ করবেন সে সম্পর্কে আপনাদেরকে জানিয়েছি।
তবে অবশ্যই আপনাদের মনে রাখতে হবে যে আপনারা যখন রোজা রাখছেন সে ক্ষেত্রে ইফতারের সময় আপনাদের দোয়া পাঠ করে রোজা শেষ করতে হবে।
রোজার ইফতারের দোয়া কিভাবে পাঠ করতে হয় সেই সম্পর্কে এখন আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাবো।
بِسْمِ الله – اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ
ইফতারের দোয়া আরবি উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া আলা রিযক্বিকা আফত্বারতু।
অর্থ : ‘আল্লাহর নামে (শুরু করছি); হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্যে রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক হাদিসের মাধ্যমে সঠিক সময়ে ইফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
পড়ুনঃ
অর্থাৎ অনেকেই এমন রয়েছেন যারা সঠিক সময়ে ইফতার না করে নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকেন।
কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের মহানবী (সা.) বলেছেন ইফতার রোজার সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথেই করা অত্যন্ত জরুরী।
ইফতার করার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে সেই সকল করণীয় সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানব।
প্রতিটি মুসলিমের ইফতারের সময় করণীয়
- সঠিকভাবে ইফতারের দোয়া পাঠ করে ইফতার শুরু করা।
- ইফতারের সময় হলেই ইফতার করে নেয়া।
- ইফতারের সময় অন্য যেকোনো কাজে ব্যস্ত না থেকে ইফতার শেষ করা।
- মহান আল্লাহর কাছে ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।
- খেজুর কিংবা সাদা পানি অথবা দুধ দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজটি জামাতের সঙ্গে আদায় করা।
- মাগরিবের জামাত ইফতারের জন্য দেরি না করা।
- ইফতারের ক্ষেত্রে ভারী কোন খাবার না খাওয়া। মাগরিবের নামাজ শেষ করে তৃপ্তি সহকারে পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া। এতে করে শরীর এবং মন দুটোই সুস্থ এবং সবল থাকে। মূলত ইফতারের সময় বেশি বা অতিরিক্ত খাবার খেলে জামায়াতে ইবাদাত থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
রোজা রাখার নিয়ত আরবিতে FAQS
নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া আলা রিযক্বিকা আফত্বারতু।
২০২৩ সালে প্রথম রোজা হবে ২৩ মার্চ (চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল) শুরু হবে।
আমাদের শেষ কথা
রোজা রাখার নিয়ত আরবি এবং বাংলায় আপনাদেরকে এই পোষ্টের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে।
ইসলামের দোয়া এবং নিয়ত গুলো সম্পর্কে আমাদের যতটুকু সম্ভব হয়েছে আপনাদের জানিয়েছি।
কোরআন কিংবা হাদিস সম্পর্কে আমরা খুবই নগণ্য এবং ছোট মানুষ।
এ বিষয়ে যদি আমাদের কোন ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের ক্ষমার নজরে দেখবেন।
এই ধরনের গুরুত্ব পোস্ট গুলো পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন। আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এরকম আরো পোস্টগুলো পাবেন।