কুরবানি কার উপর ফরজ – কি পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে কুরবানি দিতে হয়

আসসালামু আলাইকুম, কুরবানি কার উপর ফরজ সেই সম্পর্কে জানতে আপনারা অনেকেই google এর মাধ্যমে সার্চ করে থাকেন। আমরা আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোষ্টের মাধ্যমে কুরবানি কার উপর ফরজ সেই সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত তথ্য গুলো আলোচনা করতে চলেছি।

যেহেতু প্রতিটি মুসলিমগণ বছরে দুটি ঈদ পালন করে থাকেন এবং মহান আল্লাহ তায়ালা এই দুটি পবিত্র দিনকে ইসলামে উৎসবের দিন হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইয়েরা ঈদ-উল-ফিতর এবং ঈদুল আযহা সম্মিলিতভাবে পালন করে থাকেন।

খুব দ্রুতই আমাদের মাঝে উপস্থিত হতে চলেছে ঈদুল আযহা। এই ঈদুল আযহা কে কেন্দ্র করে যেহেতু কোরবানি প্রদান করতে হয়।

সেহেতু কুরবানি কার উপর ফরজ সেই সম্পর্কে জানার জন্য আপনারা অনেকেই গুগলের সার্চ করে থাকেন।

মূলত কার কি পরিমান সম্পদ থাকলে তার ওপর কোরবানি ফরজ হয় কিংবা কোন কোন ব্যক্তি কুরবানী দিবেন সেই সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা কি সে সকল বিষয়গুলো নিয়ে আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

তাই অবশ্যই আমাদের আজকের এই পোস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

কোরবানি কাদের উপর ফরজ – কুরবানি সম্পর্কে বিশেষ ধারনা

কোরবানি কাদের উপর ফরজ
কোরবানি কাদের উপর ফরজ

আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলামে যে সকল বিধান রয়েছে সেই সকল বিধানগুলোর মধ্যে কুরবানী অন্যতম একটি বিধান।

পবিত্র কোরআন মজিদের মাধ্যমে কোরবানির ফজিলত এবং তাৎপর্য সম্পর্কে সকল বিষয়গুলো আমাদের মাঝে মহান আল্লাহ তুলে ধরেছেন।

এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি এবাদত মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তার পক্ষ থেকে প্রদান করেছেন।

এখন আমাদের সামনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন হচ্ছে কুরবানি কার উপর ফরজ?

মূলত যে সকল ব্যক্তির স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক, ওই ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন তাহলে তার জন্য কুরবানী দেওয়া আবশ্যক কিংবা ওয়াজিব।

এখন অনেকের মাঝে এই ধরনের প্রশ্ন আসে যে নিসাব পরিমাণ সম্পদ ঠিক কতটুকু? 

নিসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে বোঝায় যে ব্যক্তির নিকট সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ কিংবা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা এর সমপরিমাণ নগদ টাকা ও ব্যবসার পণ্য অথবা অন্যান্য সম্পদ থাকবে তার ওপর কোরবানি প্রদান করা ওয়াজিব কিংবা আবশ্যক।

প্রতিবছর একটি দিনে মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে যে সকল মুসলিম ভাইদের সামর্থ্য থাকে তারা পবিত্র কোরবানি দিয়ে থাকেন।

কোরবানি দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করা।

এছাড়াও কোরবানি অর্থ হচ্ছে কাছে যাওয়া কিংবা নৈকট্য অর্জন করা অথবা ত্যাগ স্বীকার করা বা বিসর্জন দেওয়া।

মহান আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করে তার কাছে যাওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে পবিত্র কোরবানি অন্যতম।

এছাড়াও যদি আমরা পরিভাষায় বলি তাহলে কোরবানি হচ্ছে আরবে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল হতে জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত মহান আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে যে শরীয়তের বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট একটি পশু জবাই করা হয় তাই হচ্ছে কোরবানি।

পবিত্র এই দিনে যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা একটি ছাগল, একটি ভেড়া, একটি দুম্বা, একটি উট, একটি গরু, একটি মহিষ মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে কোরবানি করে থাকেন।

আবার অনেকেই রয়েছেন যারা একাধিক ভাবে কোরবানি দিয়ে থাকেন।

একটি হালাল কোরবানি যোগ্য পশুতে সাতজন মুসলমান ভাই একত্রে যোগদান করে সাতপক্ষ হয়ে কোরবানি দিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ

ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বার্তা

কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম

কোরবানির পশুর বয়স এবং গুনাগন – কুরবানির ঈদ ২০২৩

যেহেতু কোরবানির ঈদ কবে দ্রুত আমাদের সামনে এসে পড়েছে তাই কোরবানির সকল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব কোরবানির পশুর বয়স এবং গুনাগুন নিয়ে।

কোরবানির পশুর বয়সের পাশাপাশি কোরবানির পশুর গুনাগুন সম্পর্কে খেয়াল রাখার জন্য আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

কোরবানির পশুর গুনাগুন সম্পর্কে আমাদের প্রথমত স্পষ্ট ধারণা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তাই কি হতে পারে কোরবানির পশুর গুনাগুন সে সম্পর্কে নিচে আমরা কোরবানির পরশুর গুনাগুন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো তুলে ধরলাম-

১/ কোরবানির পশু ঢুকে দেখতে সুন্দর হতে হবে।

২/ কোরবানির পশুটি হতে হবে নিখুঁত এবং দোষত্রুটি মুক্ত

৩/ কোরবানির পশু হতে হবে অধিক গোস্ত সম্পন্ন এবং হৃষ্টপুষ্ট। এক কথায় যদি বলা হয় তাহলে যে পশুকে দেখে একবারে পছন্দ হয়ে যায় এমন।

হাদিসে এসেছে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হজরত বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন,

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন আর আমার হাত তাঁর হাতের চেয়েও ছোট, তারপর বললেন, ৪ ধরনের পশু যা দিয়ে কোরবানি করে তা জায়েজ হবে না।

এবং সে সকল পশুগুলো হচ্ছে-

১/ অন্ধঃ যে পশু চোখে দেখতে পায় না এমন।

২/ রোগাক্রান্তঃ যে সকল পশুর রোগ স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে। 

৩/ পঙ্গুঃ যে সকল কোরবানির পশু নিজেদের পায়ে হাঁটতে পারে না এমন।

৪/ আহতঃ যে সকল কোরবানির পশুর শরীরে আহত স্পষ্ট এমন।

কোরবানির ঈদ কত তারিখে 2023 – ঈদুল আযহা ২০২৩

কোরবানির ঈদ কত তারিখে 2023
কোরবানির ঈদ কত তারিখে 2023

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ কুরবানি কার উপর ফরজ সে সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আপনাদেরকে বিস্তারিত সকল তথ্যগুলো জানিয়েছি।

এছাড়াও কুরবানী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য আপনাদের সামনে এই পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

আগামী কোরবানির ঈদ কত তারিখে ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে সেই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন।

যার কারনে আমরা আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে কোরবানির ঈদ ২০২৩ কবে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সেই সম্পর্কেও আপনাদের সকল ধারণাগুলো প্রদান করার চেষ্টা করব।

যেহেতু আরবী জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল হতে জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি দেয়া যায় সেহেতু আগামী ১০ দিন জিলহজ তারিখে আরব দেশগুলোতে পবিত্র কোরবানি পালিত হতে পারে।

যদিও এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে চাঁদ দেখার উপর।

সেহেতু আগামী ২৮ শে মে আরব দেশগুলোতে পবিত্র ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হতে পারে। 

অপরদিকে যেহেতু আমাদের বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী কিছু দেশে সৌদি আরবের পরবর্তী দিনে ঈদ পালিত হয়ে থাকে সেহেতু ২৯শে মে বাংলাদেশে ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হতে পারে।

ইতিমধ্যেই আপনাদেরকে বলেছি ঈদের সম্পূর্ণ বিষয়টি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল।

আরও পড়ুনঃ

কুরবানির ঈদ ২০২৩ কত তারিখ

বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান সিরিজ সময়সূচি ২০২৩

কুরবানি কার উপর ফরজ FAQS

কুরবানি কার উপর ফরজ?

মূলত যে সকল ব্যক্তির স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক, ওই ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন তাহলে তার জন্য কুরবানী দেওয়া আবশ্যক কিংবা ওয়াজিব।

নিসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে কি বুঝায়?

সাধারনত নিসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে বোঝায় সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ কিংবা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা এর সমপরিমাণ নগদ টাকা ও ব্যবসার পণ্য অথবা অন্যান্য সম্পদকে।

কোরবানির ঈদ ২০২৩ কবে?

আগামী ১০ জিলহজ বিভিন্ন আরব দেশ গুলোতে চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল হয়ে ঈদ পালন করা হতে পারে।
সেই হিসেব অনুসারে আগামী ২৮ মে কুরবানির ঈদ। আর তার ১ দিন পর বাংলাদেশে ঈদ পালিত হতে পারে।

কুরবানি কার উপর ফরজ সেই সম্পর্কে আমাদের শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আমরা ইতিমধ্যেই আপনাদের সাথে কুরবানি কার উপর ফরজ এবং কুরবানী সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্যগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করেছি।

আশা করছি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে।

এবং আপনারা আজকের এই পোস্ট থেকে কুরবানী সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানতে পারবেন।

আপনাদের যদি আজকের এই পোস্ট সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

আমরা সকল সময়ে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ কমেন্ট এর উত্তর প্রদান করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সকল পোস্টগুলো আমরা নিয়মিতই আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করে থাকে। 

তাই অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন। 

সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের এই পোস্ট এখানে শেষ করছি সকলকে ধন্যবাদ।